যে সব খাবার আপনাতে যৌবন ধরে রাখতে সহায়তা করবে, সেই সকল খাবার নিয়ে আজকের এই লেখাটি। এখানে পাবেন যৌবন ধরে রাখতে ১৫ টি খাবারের ভূমিকা.....
ছবি:সংগৃহিত
যৌবন ধরে রাখতে
কে না চায়? আসলে আমরা সবাই যৌবন ধরে রাখতে চাই। আর এই যৌবন ধরে রাখতে আমরা কত কিছুই
না করি। সুস্থ সবল জীবন যাপন করতে যেমন পুষ্টিকর খাবারের ভূমিকা অপরিসীম তেমনী যৌবন
ধরে রাখতে পুষ্টিকর খাবারের তুলনা হয় না। নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার গ্রহন করুন, যৌবনকে
ধরে রাখুন।
আজীবন যৌবন ধরে রাখতে যে খাবার গুলো খাবেন
ছবি :সংগৃহিত
আদা ও রসুনঃ- সকালে খালি পেটে এক কোয়া রসুন এবং এক
টুকরা আদা চিবিয়ে খেলে যৌন শক্তি বৃদ্ধি পায়। তবে যাদের খালি পেটে খেতে অসুবিধা হয়
তারা খাওয়ার পর খাবেন কোন অসুবিধা হবে না। এটি আপনার শরীরের টেস্টোস্টেরনের মাত্রা
বৃদ্ধি করে ফলে বীর্য ঘন হয়। তাছাড়া আদা ও রসুন দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়
। রসুন রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে।
প্রতিদিন সকালে নিয়মিত এক কোয়া রসুন খেলে হৃদরোগে
আক্রান্ত হওয়ার আশস্কা কমে যায়। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে থাকে। রসুনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান থাকে তার মধ্যে অ্যালিসন অন্যতম। এটি ক্যান্সার
সহ বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে দারুণকার্যকারী। এই অ্যালিসনের কারনে রসুনকে সুপার খাবার
হিসাবে চিহিৃত করা হয়েছে।
ছবি :সংগৃহিত
মধু : মধুর উপকারিতা সম্পর্কে বলার আর অপেক্ষা
থাকে না কারণ মধুর উপকারিতা আমরা প্রায় সবাই জানি। প্রতিদিন সকাল বেলা এক চা চামচ
মধু খেলে আপনি কোন দিনও দূ্র্বল অনুভব করবেন না এবং আপনার যদি গ্যাস্টিক ও কোষ্ঠ্যকাঠিন্ন
থাকে তাহলেও অনেক উপকার পাবেন।
মধুতে থাকা ৪৫ টি উপাদান দেহের প্রায় প্রত্যেকটি অঙ্গের উপকার করে ।বিশেষ করে যারা যৌন দূ্র্বলতা ,সর্দি,কাশি ,হাঁপানি ,ইত্যাদিতে ভুগে থাকেন তাদের ক্ষেত্রে মধুর বিক্লপ কিছু নাই। মোট কথা ,মধু মৃত্যু ব্যাতিত সকল রোগের মহাঔষধ যা আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ ( সা:) বলেছেন।
ডিম : ডিমে থাকা প্রোটিন ও অ্যামাইনো এসিড শরীর দূর্বল হতে দেয় না। তবে নিয়মিত ডিম খেতে হবে। অনেকে ডিমের সাদা অংশ খায় কসুম খায় না আবার অনেকে কসুম খায় সাদা অংশ খায় না তা কিন্তু হবে না। ডিম সাধারণত সিদ্ধ খাওয়া ভালো। প্রতিদিন সকালে একটি ও রাতে একটি সিদ্ধ ডিম খেতে পারেন। এতে করে শরীরের রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায় ফলে শরীরে অনেক শক্তি পাওয়া যায়। এছাড়া ডিম খেলে Heart attack ও Stroke এর ঝুকি অনেকটা কমে যায়।
কালোজিরা : এটি একটি মসলা জাতীয় খাবার কিন্তু এর পুষ্টিগুন অনেক। কালোজিরায় প্রায় ১০০ টিরও বেশি উপকারী উপাদান রয়েছে। তার মধ্যে প্রায় ৩৫ শতাংশ ভেষজ , ৩৮ শতাংশ শর্করা ,ও ২১ শতাংশ আমিষ থাকে। এছাড়াও রয়েছে ক্যালসিয়াম ,পটাসিয়াম ,ম্যাগনেসিয়াম ,আয়রন ,ভিটামিন এ ,বি , সি ,নিয়াসিন ও সেলিনিয়াম ইত্যাদি । যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। তা্ই নিয়মিত কালোজিরা খান আর যৌবন ধরে রাখুন আজীবন।
কলা :কলা সহজ লভ্য ফল। কলা সব সময় পাওয়া যায়। পৃথিবীর প্রায় সব দেশিই কমবেশি কলা পাওয়া যায়। কলার উপকারিতা বা পুষ্টিগুন সম্পর্কে বলা বাহুল্য। কলাতে প্রচুর পরিমানে ক্যালরি ভিটামিন A, B, C এবং পটাসিয়াম রয়েছে।
যা পটাসিয়ামের অভাব পূরণ করতে সহায়তা করে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। প্রতিদিন নিয়মিত কলা খেলে পেটের আলসার নিরাময় হয় ,হজম শক্তি বাড়ে হৃদপিন্ড ভালো থাকে। তাছাড়া কলাতে ব্রোমেলিয়ান নামক উপাদান থাকে যা টেস্টোস্টেরণ বৃদ্ধি করে যৌবন অটুট বা ধরে রাখতে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
কমলালেবু ((Orange):ভিটামিন সি সমৃদ্ধ একটি ফল। এতে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন এ ,বি ,সি পটাসিয়াম ,ক্যালসিয়াম ,ম্যাগনেসিয়াম ফসফরাসে পরিপূর্ণ একটি ফল কমলালেবু। এতে প্রচুর পরিমানে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস থাকায় মানব দেহের জন্য খুবেই উপকারী। এটি দেহের শর্করার মাত্রা কমিয়ে দেয় ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তাকরে। এটি দেহ থেকে টক্সিক পদার্থ বের করে দেয় যার ফলে ত্বকের সৌন্দর্য্য ধরে রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
ছবি :সংগৃহিত
স্ট্রবেরি : স্টবেরি ফল দেখতে যেমন সুন্দর ,থেতেও তেমনি মজাদার। নিয়মিত স্টবেরি খেলে এতে থাকা ভিটামিন সি
,আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায় এবং বয়স ধরে
রাখতে সহায়তা করে।
ডার্ক চকলেট : ডার্ক চকলেটে প্রচুর পরিমানে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা দেহের কোষ ক্ষতিগ্রস্থ থেকে রক্ষা করে। ডার্ক চকলেট ডোপামিন হরমোন বৃদ্ধি করে ফলে আপনাকে সবসময় হাসি-খুসি রাখতে সহায়তা করে। গবেষণায় দেখা গেছে যে, যে কোনো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ফলের চেয়ে ডার্ক চকলেট শ্রেয়। ডার্ক চকলেট বয়সের ছাপ বা বলিরেখা দূর করতে সহায়তা করে। ফলে দীর্ঘদিন যৌবন থাকে অটুট।
অলিভ অয়েল : অলিভ অয়েল সম্পর্কে আমরা প্রায সবাই জানি কিন্তু এর ব্যাবহার সম্পর্কে হয়তো আমরা জানি না। কারণ ,সবাই যদি অলিভ অয়েল সম্পর্কে জানতো তাহলে সবাই অলিভ অয়েল ব্যাবহার করত। নিয়মিত অলিভ অয়েল খেলে শরীরের ক্ষতিকর কোলেস্টরল কমিয়ে দেয় যার ফলে হার্ট অ্যাটাক ও ডায়াবেটিসের ঝুকি কমে যায়। এ ছাড়া প্রতিদিন অলিভ অয়েল ত্বকে ব্যাবহার করলে ত্বক উজ্জ্বল ও সতেজ হয়।
ছবি :সংগৃহিত
সামুদ্রিক মাছ : আমরা বাঙ্গালি জাতি সাধারণত মাছ ও ভাত
আমাদের পছন্দ যাকে বলা হয় মাছে-ভাতে বাঙ্গালি। অন্যান্য মাছের তুলনায় সামুদ্রিক মাছ
বেশ সুস্বাদু ও পুষ্টিগুনে ভরপুর। সামুদ্রিক মাছের উপকারিতা অনেক। নিয়মিত সামুদ্রিক
মাছ খেলে স্ট্রক, ডায়াবেটিস ও হার্ট অ্যাটাক হওয়ার আশংক্ষা কমে যায়। তাই প্রতিদিন খাবারের
তালিকায় চর্বিযুক্ত, মাংস বাদ দিয়ে সামুদ্রিক মাছ যুক্ত করুন। এতে করে শরীরের প্রোটিনের
চাহিদা পূরণের পাশা-পাশি যৌবনকে ধরে রাখতে গরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
|
টক
দই :টক
দই
এ
প্রচুর
পরিমাণ
প্রোটিন আছে
যা
শরীর
গঠন
ও
হাড়
ক্ষয়
রোধে
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
পালন
করে।
দই
খুব
ভালো
প্রবায়টিক হিসেবে
কাজ
করে
তাই
পেটের
যেকোনো
সমস্যা
সমাধানে প্রথমেই টক
দই
কে
বেছে
নিন।
নিয়মিত টক
দই
খাওয়ার অভ্যাস
গড়ে
তুলুন।
টক
দই
বয়সের
ছাপ
দূর
হবে
এবং
যৌবন
ধরে
রাখতে
সহায়তা করে।
খেজুর: আমাদের
দেশের
মানুষ
সাধারণত রমজান
মাস
আসলে
খেজুর
খেয়ে
থাকে।
খেজুর
খেজুর
কি
শুধু
রমজান
মাসেই
উপকারী?
আমাদের
দেশের
মানুষের অবস্থা
দেখে
তো
তাই
মনে
হয়।
খেজুর
এমন
একটি
মূল্যবান ফল
যা
অন্য
ফলের
সাথে
তুলনা
করার
মতো
নয়।
খেজুরি
রয়েছে
প্রচুর
পরিমাণে ফাইবার,
প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ইত্যাদি। খেজুর
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর
করে
পেট
কে
পরিষ্কার করে।
খেজুর
খুব
তাড়াতাড়ি শক্তি
সঞ্চয়
করে।
তাই
নিজের
যৌবনকে
ধরে
রাখতে
প্রতিদিন নিয়মিত দুই
থেকে
চারটি
করে
খেজুর
খান।
পালংশাক : প্রতিদিন খাদ্যতালিকায় পালংশাক থাকা বাঞ্ছনীয় কারণ পালং শাক প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় আসের প্রায় 20 শতাংশ পূরণ করে। পালং শাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ ওকে রয়েছে। যা দৈহিক গঠনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
পালং
শাকে একাধারে আয়রন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, জিংক, সালফার ও সেলেনিয়াম রয়েছে যা
দেহের কার্যক্ষমতাকে বৃদ্ধি করে ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। পালং
শাকে লুটেন নামক উপাদান থাকে যা বুড়িয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করে। তাই নিয়মিত পালং
শাক খাওয়ার অভ্যাস করুন।
শেষ কথা : যৌবন
ও সৌর্ন্দয্য ধরে রাখতে পুষ্টিকর খাবারের গরুত্ব অপরিসীম। নিজের যৌবন ধরে রাখতে এবং
সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি করতে বাজার থেকে যে কসমেটিক কিনে ব্যবহার করি তা কিন্তু কোনো কাজে
আসে না। এসব কসমেটিক্স এ টাকা খরচ না করে উপরোক্ত খাবার গুলো নিয়মিত গ্রহণ করুন সুস্থ্য-সবল
জীবন গড়ুন।